দেশজুড়ে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তবে এবারের ফলাফল নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে গভীর হতাশা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এবার গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ কম। শিক্ষা বোর্ডগুলোর মধ্যে ঢাকায় সর্বোচ্চ ও কুমিল্লায় সর্বনিম্ন পাসের হার লক্ষ্য করা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রাজধানীর বকশিবাজারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা বোর্ডের সচিব প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৬৪.৬২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫৯.৪০ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৫২.৫৭ শতাংশ, কুমিল্লায় ৪৮.৮৬ শতাংশ, বরিশালে ৬২.৫৭ শতাংশ, সিলেটে ৫১.৮৬ শতাংশ, দিনাজপুরে ৫৭.৪৯ শতাংশ, এবং ময়মনসিংহে ৫১.৫৪ শতাংশ। অন্যদিকে, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ফলাফল কিছুটা উন্নত হলেও সামগ্রিকভাবে পতন স্পষ্ট।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, করোনা-পরবর্তী শিক্ষার মান পুনর্গঠনের পর্যায়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাব, পাঠ্যক্রম পরিবর্তনের জটিলতা এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মানসিক চাপ এই ফলাফলের জন্য দায়ী। তাঁরা মনে করছেন, ধারাবাহিক শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ জোরদার করা না গেলে ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
অন্যদিকে, অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক ফলাফলের মান নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ পরীক্ষার মূল্যায়নে ত্রুটি বা প্রশ্নের কঠিনতার বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রয়োজন মনে করলে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করা যাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে।
এ বছরের ফলাফল শিক্ষাব্যবস্থার মান, শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি ও শিক্ষানীতি নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ তৈরি করেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এমআইএইচ/আরবি।
Sarwar Rana