সৌদি আরবের জেদ্দায় গত মঙ্গলবার রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো রাশিয়ার ওপর নির্ভর করছে। বৈঠকে ইউক্রেন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে, তবে এটি বাস্তবায়িত হবে কি না, তা পুরোপুরি মস্কোর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
রাশিয়ার দাবি ও শর্ত
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য রাশিয়া একটি দাবিনামার তালিকা পেশ করেছে। তবে এই তালিকায় আসলে কী রয়েছে এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া শান্তি প্রস্তাব মেনে নিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
রয়টার্সের দুই সূত্রের বরাতে জানা যায়, রাশিয়ার উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদ না দেওয়া।
- ইউক্রেনে বিদেশি সেনা মোতায়েন না করার নিশ্চয়তা।
- প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দাবিকৃত ক্রিমিয়া ও চারটি প্রদেশকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।
- পূর্ব ইউরোপ থেকে মধ্য এশিয়ায় মার্কিন ও ন্যাটোর সামরিক সম্প্রসারণ বন্ধ করা।
মার্কিন প্রতিক্রিয়া ও আশঙ্কা
মার্কিন কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই যুদ্ধবিরতিকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন ও ইউরোপের মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্য ব্যবহার করতে পারেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘বল এখন পুরোপুরি রাশিয়ার কোর্টে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শান্তি আলোচনার মাধ্যমেই কেবল এই যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে।’
অন্যদিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব যাচাই করছে। এ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ফোনালাপ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে মধ্যস্থতাকারী মার্কিন প্রতিনিধিরা রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় যাচ্ছেন। জেদ্দায় ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর তারা মস্কোতে গিয়ে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির ‘ইতিবাচক’ প্রস্তাব নিয়ে রাশিয়াকে রাজি করানোর দায়িত্ব এখন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। যুদ্ধ অবসানের জন্য আসন্ন বৈঠকগুলো কতটা কার্যকর হয়, তা দেখার অপেক্ষায় বিশ্ববাসী।
দৈনিক ইনফো বাংলা