উৎসবমুখর পরিবেশে চাকসুর ভোটগ্রহণ শুরু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে
-
নিউজ প্রকাশের তারিখ :
Oct 15, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:
৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা গেছে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ভোট উৎসবের প্রাণচাঞ্চল্য। দীর্ঘদিন পর এ নির্বাচন শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক চর্চার পুনরুজ্জীবন হিসেবে দেখছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, চাকসুর ২৬টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ জন প্রার্থী। পাশাপাশি ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলে অংশ নিচ্ছেন আরও ৪৯৩ জন প্রার্থী। সব মিলিয়ে মোট ৯০৮ জন প্রার্থী নির্বাচন করছেন। এর মধ্যে নারী প্রার্থী রয়েছেন ৪৭ জন। এবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ২৭ হাজার ৫১৮ জন শিক্ষার্থী। বিকেল চারটার পর ওএমআর পদ্ধতিতে ভোট গণনা শুরু হবে। হল সংসদের ফলাফল ঘোষিত হবে নিজ নিজ হলে, আর কেন্দ্রীয় সংসদের ফলাফল ঘোষণা করা হবে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের মিলনায়তনে।
পাঁচটি অনুষদের ১৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব কেন্দ্রে রাখা হয়েছে ৬০টি ভোটকক্ষ ও ৬৮৯টি বুথ। প্রকৌশল অনুষদ ভবনে ভোট দিচ্ছেন সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থীরা, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের নতুন ভবনে (শহীদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়া ভবন) ভোট দিচ্ছেন কলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ভবনেও চলছে ভোটগ্রহণ।
নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পুরো ক্যাম্পাসকে ঘিরে রাখা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী জানান, পুলিশ, এপিবিএন, বিজিবি ও র্যাবসহ প্রায় ১২ শতাধিক সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। র্যাবের ৮টি প্লাটুন থাকবে ফল ঘোষণার পর পর্যন্ত। ভোটের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ৯০টি সিসিটিভি ক্যামেরা ও ২০টি এলইডি স্ক্রিন স্থাপন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, “চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সব ইউনিট প্রস্তুত রয়েছে।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, “সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে ভোট উৎসবে অংশ নিতে পারেন, সে লক্ষ্যে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”
অন্যদিকে, সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। শিক্ষার্থীরা বলেন, “এত বছর পর এমন গণতান্ত্রিক উৎসবের অংশ হতে পেরে আমরা গর্বিত।” অনেকেই ছবি তুলছেন, বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করছেন, আবার কেউ কেউ নির্বাচনী পরিবেশ উপভোগ করছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি ভবনের প্রিজাইডিং অফিসার অধ্যাপক মোহাম্মদ ফজলুর কাদের বলেন, “সকাল থেকেই ভোটাররা উপস্থিত হচ্ছেন, সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট চলছে। আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন এবং এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত চাকসু নির্বাচন ঘিরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এখন এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রত্যাশা, এই নির্বাচন হবে নতুন নেতৃত্ব ও গণতান্ত্রিক চর্চার এক নতুন অধ্যায়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : দৈনিক ইনফো বাংলা
কমেন্ট বক্স